জাফরান এর ২৩ টি উপকারিতা ও অপকারিতা - জাফরান ব্যবহারের নিয়ম

 জাফরান এর উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আপনি জানেন কি?। জাফরানের কিছু অসাধারণ পুষ্টি গুন রয়েছে যা আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী। আজকের এই আর্টিকেলে আমরা জাফরানের উপকারিতা জানার পর জাফরান ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কে জানবো।
জাফরান-এর-উপকারিতা-ও-অপকারিতা
জাফরানে ভিটামিন ও অন্য অন্য পুষ্টিগুনে ভরপুর যা ছোট বড়ো আমাদের সবার জন্যই খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।তাই আমাদের নিয়মিত জাফরান খাওয়া উচিত। তাহলে চলুন জাফরান এর উপকারিতা ও ব্যবহারের নিয়ম গুলো জেনেনি।

পেজ সূচিপত্র : জাফরান এর উপকারিতা ও অপকারিতা - জাফরান ব্যবহারের নিয়ম

কাশ্মীরি জাফরান এর উপকারিতা

কাশ্মীরি জাফরান এর উপকারিতা সম্পর্কে অনেকেই জানতে চেয়েছেন। জাফরান খাওয়ার আগে জাফরানের উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া উচিত।জাফরানের উপকারিতা গুলো জানলে আপনি জাফরান খেতে চাইবেন। তবে সঠিক নিয়ম অনুসরণ করে জাফরান খেলে ভালো ফল পাওয়া যায়। নিচে জাফরানের উপকারিতা গুলো দেওয়া হলো :
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে : জাফরান আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। এই জাফরানে রয়েছে ভিটামিন সি এবং আরো অন্য অন্য পুষ্টি উপাদান যা আমাদের শরীরের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
  • স্মৃতিশক্তি বাড়াতে : জাফরান আমাদের মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে এতে আমাদের স্মৃতিশক্তি ও বৃদ্ধি পায়।
  • মানসিক স্বাস্থ্য উন্নত করে : জাফরান আমাদের মানসিক স্বাস্থ্য উন্নত করে। এই জাফরানে থাকা প্রাকৃতিক উপাদান গুলো আমাদের ম্যাজাজ, মন, ইত্যাদি ভালো রাখতে সাহায্য করে।
  • হার্টের স্বাস্থ্য উন্নত করে : জাফরান আমাদের হার্টের স্বাস্থ্য উন্নত করতে সাহায্য করে। এই জাফরানে থাকা উপাদান গুলো আমাদের রক্ত চলাচল করতে সাহায্য করে। এই জাফরান আমাদের শরীরের উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে এতে আমাদের হার্ট ভালো থাকে।
  • প্রজনন স্বাস্থ্য উন্নত করে : এই জাফরানে থাকা উপাদান নারী এবং পুরুষ দুই জনেরই প্রজনন স্বাস্থ্য উন্নত করতে সাহায্য করে। এবং যৌন উদ্দীপনা যথাযথ বাড়াতে সাহায্য করে।
  • ত্বকের যত্নে : ত্বক আমাদের শরীরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এই জাফরানে থাকা উপাদান গুলো আমাদের ত্বকের দাগ, ব্রণ ইত্যাদি দূর করে ত্বক কে উজ্জ্বল করে তোলে।
  • অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের ঘাটতি পূরণ : এই জাফরানে রয়েছে ক্রোসিন, সাফরানাল, ক্রোকেটিন নামক অ্যান্টি অক্সিডেন্ট যা আমাদের শরীরের কোষ গুলোকে সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করে।
  • দৃষ্টিশক্তি উন্নত করে : এই জাফরানে থাকা উপদান গুলো আমাদের দৃষ্টিশক্তি উন্নত করতে সাহায্য করে। চোখের পানি পড়া সমস্যাও দূর করতে সাহায্য করে এই জাফরান।
  • হজমশক্তি উন্নত : জাফরান আমাদের শরীরের হজমশক্তি উন্নত করতে সাহায্য করে। এই জাফরানে থাকা উপাদান গুলো খাবারকে হজম করতে সাহায্য করে।
  • দাঁতের সমস্যা দূর : জাফরান আমাদের শরীরের জন্য যেমন উপকার । তেমনি আমাদের দাঁতের জন্যও জাফরান খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই জাফরানে থাকা উপাদান গুলো আমাদের দাঁতের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।

গর্ভাবস্থায় জাফরান এর উপকারিতা

গর্ভাবস্থায় জাফরান এর উপকারিতা সম্পর্কে জানার জন্য অনেকেই গুগলে সার্চ করে থাকেন।কিন্তু কোনোও সঠিক তথ্য খুঁজে পাচ্ছেন না। কোনো সমস্যা নেই আজকের আর্টিকেলের এই অংশে আমি আপনাদের জানাবো। এই জাফরানে সাধারণত ভিটামিন সি,আয়রন,পটাশিয়াম,ভিটামিন বি, ভিটামিন এ ও অন্য অন্য পুষ্টি উপাদান বিদ্যমান রয়েছে। যা আমাদের শরীরের কিডনি হার্ট, এবং ক্যান্সার এর মতো রোগেও খুবই উপকারী। নিচে জাফরানের কিছু উপকারিতা দেওয়া হলো :
  • হজম শক্তি উন্নত করে : একজন গর্ভবতী মায়ের গর্ভাবস্থায় প্রায় অম্বল, কোষ্ঠকাঠিন্য ও হজমে সমস্যা দেখা দেয়। এই জাফরানে রয়েছে ভিটামিন সি ও ফাইবার যা হজম প্রক্রিয়া শক্তিশালী করে।
  • রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে : গর্ভাবস্থায় প্রায়ই গর্ভবতী মায়ের উচ্চ রক্তচাপ দেখা যায়। এই জাফরানে রয়েছে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও পটাশিয়াম যা গর্ভবতী মায়ের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে।
  • রোগ প্রতিরোধ করে : গর্ভবতী মায়ের গর্ভাবস্থায় প্রায় বিভিন্ন ধরনের রোগ ও কোষ্ঠকাঠিন্য হয়ে থাকে।এই জাফরানে থাকা ভিটামিন সি ও ভিটামিন এ গর্ভবতী মায়ের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
  • হরমোন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে : এই জাফরানে থাকা পুষ্টি উপাদান গুলো গর্ভবতী মায়ের হরমোন নিয়ন্ত্রণ রাখে।ফলে গর্ভাবস্থায় খিটখিটে মেজাজ কমে যায় এবং মুড ভালো থাকে।
  • রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে : জাফরানে থাকা ভিটামিন সি, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ইত্যাদি গর্ভবতী মায়ের শরীরের রক্ত পাতলা করতে সাহায্য করে ফলে শরীরে অক্সিজেন ও পুষ্টি গুন গুলো ভালো করে তাড়াতাড়ি পৌঁছাতে সাহায্য করে।
  • ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে : এই জাফরানে থাকা ভিটামিন সি, ফোলেট, আয়রন গর্ভবতী নারীর রক্তের আয়রন শোষণ করে এবং মায়ের ত্বক সুস্থ এবং উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে।
  • রক্ত তৈরি করতে সাহায্য করে : গর্ভাবস্থায় প্রায় গর্ভবতী মায়ের রক্তশূন্যতা দেখা যায়। এই জাফরানে রয়েছে ভিটামিন সি ও আয়রন এবং অন্য অন্য পুষ্টি উপাদান যা রক্তের হিমোগ্লোবিন বৃদ্ধি করে রক্ত তৈরি করতে সাহায্য করে।
  • চোখ সুস্থ রাখে : জাফরানে রয়েছে ভিটামিন সি ও ভিটামিন এ, আয়রন যা গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মায়ের ও শিশুর চোখও দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
  • শিশুর স্বাস্থ্য ভালো করতে সাহায্য করে : এই জাফরানে রয়েছে ভিটামিন সি, আয়রন, ম্যাগনেশিয়াম ও ফোলেট যা শিশুর মস্তিষ্কের স্নায়ুতন্ত্রের বিকাশ ঘটায় এবং মায়ের স্নায়ু শান্ত রাখে এবং শিশুর দাঁত এবং হাড়ের গঠন উন্নত করতে সাহায্য করে।
  • ক্র্যাম্প ও পেটের ব্যথা কমায় : গর্ভবস্থায় একজন গর্ভবতী মায়ের তলপেটে ব্যথা এবং মাংস পেশির টানে ব্যথা হতে পারে। এই জাফরান কিছুটা অ্যান্টি - স্পাসমোডিক হিসেবে কাজ করে যা গর্ভবতী মায়ের পেটে ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।

জাফরানের পরিচিতি

জাফরানের পরিচিতি সম্পর্কে অনেকেই জানতে চেয়েছেন।এই জাফরান সাধারণত বাংলাদেশে চাষ করা হয় না। জাফরান ভারত, ইরান, গ্রিস ইত্যাদি জায়গায় প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায় । এর ইংরেজি নাম হলো crocus sativa। প্রায় ৩৫০০ বছর আগে থেকেই ভারত, গ্রিস, ইরান ইত্যাদি জায়গায় চাষ করা হচ্ছে। এটি বাংলাদেশের আবহাওয়ার সাথে যায় না সে কারণে বাংলাদেশে এর চাষ করা হয় না। এজন্য বিভিন্ন দেশ থেকে নিয়ে আসতে হয় এজন্য এর দাম একটু বেশি হয়ে যায়। 
এই জাফরান আমাদের শরীরের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই জাফরান আমাদের শরীরের ৯০ টিরও বেশি রোগের ঔষধ হিসেবে কাজ করে। এই জাফরান দিয়ে বিভিন্ন ধরনের খাবার জিনিস এবং ফ্রেসিয়াল তৈরি করা হয়। আমাদের ঠান্ডা, কাশি,জ্বর ইত্যাদিতে এই জাফরান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি মূলত বহিরাগত ফুল থেকে আরহিত হয়। এটি খাবারের সাথে মিশিয়ে খেলে খাবারের স্বাদকে অনেকটা বৃদ্ধি করে দেয়।

জাফরান ব্যবহারের নিয়ম

জাফরান ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কে জানার জন্য অনেকেই বিভিন্ন জায়গায় সার্চ করে খোঁজাখুজি করেন। ইতি মধ্যে জাফরান এর উপকারিতা ও পরিচিতি সম্পর্কে জেনেছেন।এই জাফরান আমাদের শরীরের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
জাফরান-ব্যবহারের-নিয়ম
তাই আমাদের নিয়মিত পরিমাণ মতো জাফরান খাওয়া উচিত। জাফরান খাওয়ার ও ব্যবহারের বেশ কয়েকটি নিয়ম রয়েছে। নিয়ম অনুসরণ করে জাফরান খেলে বা ব্যবহার করলে অনেক বেশি উপকার পাওয়া যায়। নিচে জাফরান ব্যবহারের নিয়ম গুলো দেওয়া হলো :
  • পরিস্কার করা : জাফরান কিনে এনে সরাসরি ব্যবহার না করাই ভালো। প্রথমে জাফরান গুলোকে পরিস্কার পানিতে ১০ - ১৫ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন। এর পর দেখবেন জাফরান থেকে সুন্দর গন্ধ বের হচ্ছে এবং জাফরান গুলো হলুদ রঙ ধারণ করেছে।এর পর পানি থেকে উঠিয়ে রেখে দিন।
  • দুধের সাথে জাফরান : দুধের সাথে জাফরান খুবই উপকারী। এজন্য এক গ্লাস গরম দুধের মধ্যে ২-৩ টি জাফরানের রেশম কিছুখন ভিজিয়ে রেখে পান করুন।এছাড়াও অতিরিক্ত স্বাদের জন্য মধু বা কিসমিস যোগ করতে পারেন।এতে হজম শক্তি উন্নত হয় এবং ঘুম ভালো হয়।
  • চায়ের সাথে জাফরান : গ্রিন টি বা হারবাল চা এবং অন্য অন্য পানি প্রানীয় এর সাথে জাফরানের ২-৩ টি রেশম ভিজিয়ে খেলে যেমন এর স্বাদ বৃদ্ধি পায় তেমনি শরীরের অসাধারণ উপকারিতা পাওয়া যায়।
  • রান্নার খাবারে জাফরান : বিভিন্ন খাবারের সাথে জাফরান খুবই উপকারী। যেমন : বিরিয়ানি, পোলাও,খিচুড়ি, পায়েস, সেমাই, খিন্নি দই,মিষ্টি ইত্যাদি ব্যবহার করা যায়। এজন্য জাফরান গরম দুধ বা পানিতে ১০-১৫ মিনিট ভিজিয়ে রেখে রান্না শেষে ছিটিয়ে দিতে হবে এতে রঙ ও সুগন্ধি দুটোই ভালো হয়।
  • ত্বকের যত্নে জাফরান : এই জাফরান আমাদের ত্বকের যত্নে খুবই উপকারী। এজন্য জাফরানের কয়েকটি রেশম গোলাপ জল বা দুধের মধ্যে ১০-১৫ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন। এর পর এটি সরাসরি মুখে ব্যবহার করতে পারবেন তবে আপনি চাইলে এর সাথে মধু, চন্দন গুঁড়ো ব্যবহার করতে পারেন এতে আপনার ত্বক উজ্জ্বল করতে সাহায্য করবে।

জাফরান সাবান ব্যবহারের নিয়ম

জাফরান সাবান ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কে জানতে চেয়ে অনেকেই গুগলে সার্চ করে থাকেন।জাফরান আমরা সবাই কম বেশি চিনে থাকি। ইতি মধ্যে আমরা জাফরান এর উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানিয়েছি।এই জাফরান দিয়েই সাবান তৈরি করা হয় যা আমাদের শরীর ও ত্বক উজ্জ্বল ও ফর্সা করতে সাহায্য করে।এই জাফরানে ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা আমাদের ত্বককে উজ্জ্বল করতে সাহায্য করবে। তাই জাফরান সাবান ব্যবহারে উপকার পেতে সঠিক ভাবে ব্যবহার করতে হবে। নিচে জাফরান সাবান ব্যবহারের নিয়ম গুলো দেওয়া হলো :
  • প্রথমেই হালকা গরম পানি দিয়ে শরীর ও মুখ ভিজিয়ে নিন।এছাড়াও চাইলে আপনি ঠান্ডা পানিও ব্যবহার করতে পারেন তবে গরম পানি ব্যবহার করলে ময়লা ভালো পরিস্কার হয় এবং সাবানের ফেনাও ভালো হয়।
  • এর পর জাফরান সাবান হাতে নিয়ে ভালো মতো ফেনা তৈরি করুন।এর পর আপনার মুখ ও শরীর আলতোভাবে ১-২ মিনিট ম্যাসাজ করুন।
  • এর পর পরিস্কার পানি দিয়ে ভালো মতো মুখ ও শরীর ধুয়ে ফেলুন। এর পর নরম তোয়ালে দিয়ে মুখ ও শরীর মুছে ফেলুন। জোরে জোরে ঘষা দিবেন না এতে ত্বকের ক্ষতি হতে পারে।
  • এভাবে সাবান ব্যবহারের পর ত্বকে অ্যালো ভেরা জেল ব্যবহার করলে ত্বক নরম ও উজ্জ্বল হয়। তাই শরীর ও ত্বকের তৈলাক্ত দূর করতে দিনে ১-২ বার ব্যবহার করা যেতে পারে।

জাফরান দুধের উপকারিতা

জাফরান দুধের উপকারিতা সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানি না। দুধ আমাদের শরীরের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই দুধে রয়েছে ভিটামিন, ক্যালসিয়াম,প্রটিন ও অন্য অন্য পুষ্টি উপাদান যা আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারি। এই পুষ্টিকারী দুধের সাথে যদি সামান্য জাফরান মিশিয়ে সেবন করেন তাহলে এর উপকারিতা আরো বেড়ে যায় এবং দুধের স্বাদ ও গন্ধ দুটোই বেড়ে যায়। নিচে জাফরান দুধের উপকারিতা গুলো দেওয়া হলো :
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে : এই জাফরান ও দুধে রয়েছে ক্রোসিন,ক্রোসেটিন,ভিটামিন সি এবং অ্যান্টি অক্সিডেন্ট যা আমাদের শরীর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। বিশেষ করে ঠান্ডা, কাশি কমাতে সাহায্য করে।
  • ঘুম ভালো হয় : জাফরানে রয়েছে সেরোটোনিন এবং দুধে রয়েছে ট্রিপটোফ্যান যা আমাদের ভালো ঘুম হতে সাহায্য করে।এছাড়া অনিদ্রা ও মানসিক চাপ কমাতে খুবই উপকারী।
  • হজম শক্তি উন্নত করে : এই জাফরান দুধে রয়েছে ভিটামিন সি ও ফাইবার এবং অন্য অন্য পুষ্টি উপাদান যা আমাদের শরীরের হজমশক্তি বৃদ্ধি করে এবং গ্যাস ও অন্য অন্য সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।এছাড়াও আমাদের শরীরের কোষ্ঠকাঠিন্য রোগ দূর করতে সাহায্য করে।
  • দাঁত ও হাড় মজবুত করে : এই জাফরান দুধে রয়েছে ভিটামিন ডি, ভিটামিন সি, ক্যালসিয়াম যা একসাথে মিশে আমাদের শরীরের দাঁত ও হাড়কে শক্তিশালী ও মজবুত করতে সাহায্য করবে।
  • ত্বকের স্বাস্থ্য উন্নত করে : এই জাফরানে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং দুধে রয়েছে ভিটামিন এ,ভিটামিন বি২, ভিটামিন বি ১২ যা আমাদের ত্বকের দাগ দূর করে ভেতর থেকে উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে।
  • প্রজননশক্তি বৃদ্ধি করে : এই জাফরান ও দুধে থাকা পুষ্টি উপাদান গুলো বিশেষ করে পুরুষদের প্রজনন ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।

জাফরান দুধ খাওয়ার নিয়ম

জাফরান দুধ খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে অনেকেই জানতে চেয়েছেন। জাফরান দুধ খাওয়ার অনেক উপকারিতা রয়েছে। ইতি মধ্যে আমরা জাফরান সম্পর্কে বিস্তারিত জেনেছি। জাফরান দুধ খাওয়ার নিয়ম অনুসরণ করে জাফরান খেলে অনেক উপকার পাওয়া যায়। তাহলে চলুন জাফরান দুধ খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নি
  • জাফরান দুধ তৈরি করার জন্য প্রথমে এক গ্লাস হালকা গরম দুধ একটি গ্লাসে ঢেলে নিন।
  • এরপর গ্লাসের দুধের মধ্যে জাফরানের ৫-৭ টি রেশম ছেড়ে দিন।
  • এর পর প্রায় ১০-১৫ মিনিট এভাবেই ভিজিয়ে রাখুন,এতে জাফরানের রঙ দুধে মিশে আকর্ষণীয় ও পুষ্টিকারী করে তুলবে।
  • এছাড়াও আপনি চাইলে এর সাথে মধু বা চিনি মিশিয়ে খেতে পারেন।
এর পর প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে এই জাফরান দুধ খেতে হবে। রাতে ঘুমানোর আগে এই জাফরান দুধ খেলে অনেক বেশি উপকার পাওয়া যায়। রাতে ঘুমানোর পর এই জাফরান দুধ খুব ভালো শরীর কাজ করতে পারে। এতে আমাদের মানসিক চাপ কমে এবং আমাদের ঘুম ভালো হয়।

জাফরান কফির উপকারিতা

জাফরান কফির উপকারিতা সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানি না। জাফরান কফি আমাদের শরীরের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কফি আমরা অনেকেই খায়। জাফরান ব্যবহারের নিয়ম অনুসরণ করে এই কফির সাথে সামান্য ২-৩ টি জাফরান রেশম মিশিয়ে সেবন করলে এর স্বাদও বেড়ে যায় তা আমরা অনেকেই জানি না । এই জাফরান কফি তৈরি করা খুবই সহজ।প্রথমে প্রতিদিনের মতো কফি তৈরি করে একটি কাপে রাখুন। এর পর পরিমান মতো জাফরান কফির মধ্যে দিয়ে দিন। এবং ভালো করে মিশিয়ে সেবন করুন।
জাফরান-কফির-উপকারিতা
আপনি যদি অতিরিক্ত চিন্তিত হয়ে থাকেন সবসময় তাহলে এই জাফরান কফি আপনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আপনি যদি ওজন কমাতে চান তাহলে এই জাফরান কফি খেতে পারেন।আপনার রাতে ঘুম ভালো না হলেও এই জাফরান কফি খেতে পারেন কেননা এই জাফরান কফি আপনার রাতের ঘুম ভালো করতে সাহায্য করবে। তবে মনে রাখবেন জাফরান কফির সাথে চিনি যোগ করা যাবে না। এতে কোনো উপকার নাও হতে পারে।

জাফরান এর কেজি কত টাকা

জাফরান এর কেজি কত টাকা তা সম্পর্কে অনেকেই জানতে চেয়েছেন। জাফরান আমাদের শরীরের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই জাফরান ভারত, ইরান গ্রিস ইত্যাদি জায়গায় প্রচুর পাওয়া যায়। তবে দুঃখজনক সত্য যে এই জাফরান আমাদের দেশে চাষ করা হয় না। এটি বাহিরের দেশ গুলো থেকে নিয়ে আসতে হয়।যেহেতু এটি বাহিরের দেশ থেকে নিয়ে আসতে হয় তাই বিভিন্ন খরচ হিসাব করে এর দাম একটু বেশিই হয়।
এই জাফরান বাংলাদেশের বাজারে কিনতে গেলে প্রতি কেজি ভালো মানের কাশ্মীরি জাফরান প্রায় ৩ লক্ষ টাকা। এছাড়াও অন্য অন্য জাফরান যেমন ইরানি জাফরান প্রায় ২৫ হাজার টাকা থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি করা হয়। এছাড়াও প্রতি ১ গ্রাম কাশ্মীরি জাফরান প্রায় ২৫০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা বিক্রি করা হয়। এছাড়াও প্রতি ১০০ গ্রাম জাফরান দাম প্রায় ২০০০ থেকে ৩০০০ টাকা হতে পারে।

তবে স্থান ভেদে এর দাম কম বেশি হতে পারে। তবে এই জাফরান কিনা থেকে একটু সাবধান থাকা উচিত।বর্তমানে বাংলাদেশে এই জাফরানের দাম বেশি হওয়ায় অনেক অসাধু ব্যবসাহী এই জাফরান এর সাথে ভেজাল মিশিয়ে বাজারজাত করছে । তাই ভলো করে দেখে বুঝে তার পর এই জাফরান কিনবেন।

জাফরানের অপকারীতা

জাফরানের অপকারীতা সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানি না। যদিও জাফরান আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী। কিন্তু কিছু সময় এটি আমাদের ক্ষতি করতে পারে। তাই নিয়ম অনুসরণ করে জাফরান খেতে হবে। জাফরানের অপকারীতা গুলো জানা থাকলে আপনার জাফরান খেতে কোনো সমস্যা হবে না। নিচে জাফরান এর  অপকারিতা গুলো দেওয়া হলো :
  • জাফরান অতিরিক্ত খেলে কিছু কিছু মানুষের বমি, মাথাব্যথা, ইত্যাদি সমস্যা দেখা দিতে পারে।
  • জাফরান খেলে কিছু মানুষের অ্যালার্জি জনিত সমস্যা হতে পারে।
  • জাফরান অতিরিক্ত খেলে কিছু কিছু মানুষের হজমে সমস্যা দেখা দিতে পারে।
  • যারা ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত তারা চিকিৎসক এর পরামর্শ অনুযায়ী জাফরান গ্রহণ করুন।
  • গর্ভবতী নারীরা জাফরান খাওয়া থেকে বিরত থাকুন কারণ এটি জরায়ু সংকোচন করে অকাল গর্ভপাতের কারণ হতে পারে।
  • জাফরান যেহেতু রক্ত পাতলা করে তাই এটি অতিরিক্ত সেবন করা যাবে। এতে রক্তপাতের ঝুঁকি বাড়ায়।
  • বর্তমান বাজারে জাফরানের দাম একটু বেশি । অনেক মানুষ এই জাফরানের মধ্যে ভেজাল দিয়ে জাফরান বাজারজাত করছে যা খুবই স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়ায়।
জাফরান সেবনে ওপরের সমস্যা গুলো হতে পারে। তবে এটি সবার হবে এমনটা নয়। তবে জাফরান ব্যবহারের নিয়ম  অনুসরণ করে অল্প পরিমান জাফরান খাওয়া উচিত।পরিমানের বেশি জাফরান খাওয়া উচিত নয় এতে ক্ষতি হতে পারে। কোনো সমস্যা দেখা দিলে চিকিৎসক এর পরামর্শ অনুযায়ী জাফরান গ্রহণ করুন।

শেষ কথা : জাফরান এর উপকারিতা ও অপকারিতা

প্রিয় পাঠক আজকের এই আর্টিকেলে আমরা জাফরান খাওয়ার উপকারিতা ও জাফরান ব্যবহারের নিয়ম  সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি।জাফরান দুধ,কফি, সবজি এবং অন্য অন্য পানীয়ে কিভাবে কত পরিমাণে খাবেন তা সম্পর্কে জানিয়েছি।

জাফরান কিভাবে ব্যবহার করবেন এবং কিভাবে তৈরি করবেন তা সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়েছি।আশা করছি আজকের এই আর্টিকেলটি পড়ে জাফরান সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। প্রিয় পাঠক আজকের মতো এই পর্যন্তই আল্লাহ হাফেজ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

দ্যা ফ্রিল্যান্স আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url