মাশরুমের ২০ টি উপকারিতা-মাশরুম খাওয়ার নিয়ম
মাশরুমের উপকারিতা সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানি না। বর্তমানে সচেতন মানুষের মধ্যে
মাশরুম খাওয়ার প্রবণতা অনেক বেড়েছে। এই মাশরুম শুধু সুস্বাদুই নয় এতে রয়েছে অনেক
ধরনের ভিটামিন ওপুষ্টি উপাদান। তাহলে চলুন মাশরুমের উপকারিতা গুলো জেনে নি।
মাশরুম খাওয়ার নিয়ম আমরা অনেকেই জানি না। নিয়ম অনুসরণ করে মাশরুম খাওয়া
উচিত,তাহলে চলুন মাশরুম খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা গুলো বিস্তারিত জেনে নি।
পেজ সূচীপত্র : মাশরুমের উপকারিতা - মাশরুম খাওয়ার নিয়ম
মাশরুমের উপকারিতা
মাশরুমের উপকারিতা সম্পর্কে অনেকেই জানতে চেয়েছেন।মাশরুম কম বেশি আমরা অনেকেই
খায়। কিন্তু এর কিছু অসাধারণ উপকারিতা রয়েছে যেগুলো অনেকেই জানে না। মাশরুম
শুধুমাত্র সুস্বাদুই না এটি পুষ্টিগুনে ভরপুর। এই মাশরুমে প্রচুর পরিমানে
ভিটামিন, প্রোটিন,ক্যালরি, ফাইবার, কার্বোহাইড্রেট, পটাসিয়াম এবং আরো অন্য অন্য
খনিজ উপাদান রয়েছে। তাহলে চলুন মাশরুম খাওয়ার উপকারিতা গুলো বিস্তারিত জেনে নি।
আরো পড়ুন :
জাফরানের ২৫ টি উপকারিতা
১. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
মাশরুমে রয়েছে সেলেনিয়াম এবং বিটা - গলুকান যা আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা
বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে । এই মাশরুমে থাকা উপাদান গুলো ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস এর
বিরুদ্ধে লড়াই করে সংক্রমণ প্রতিরোধ করে।
২. মানসিক স্বাস্থ্য উন্নত করে
মাশরুম আমাদের মানসিক স্বাস্থ্য উন্নত করতে সাহায্য করে। এই মাশরুমে থাকা ভিটামিন
সি কমপ্লেক্স এবংঅ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উদ্বেগ ও স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করে। এই
মাশরুমে থাকা উপাদান আমাদের মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে এবং পারকিনসন্স ও
আলঝেইমার্স রোধ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।
৩. হৃদপিন্ড সুস্থ রাখে
মাশরুম আমাদের হৃদপিন্ড সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। এই মাশরুমে রয়েছে পটাসিয়াম ও
ফাইবার যা আমাদের শরীরের উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে,হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে
সাহায্য করে।
৪. হাড়ের গঠন উন্নত মজবুত করে
আমাদের শরীরের অন্যতম অংশ হলো হাড়। ভিটামিন ডি আমাদের হাড় মজবুত রাখতে সাহায্য
করে। এই ভিটামিন ডি এর প্রধান উৎস হলো মাশরুম। এটি আমাদের শরীরের হাড়ের ক্ষয় রোধ
করে হাড়কে গঠন মূলক ভাবে শক্তিশালী করে।
৫. ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়ক
গবেষণায় দেখা গেছে মাশরুমে থাকা উপাদান গুলো ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে। এই
মাশরুমে রয়েছে বায়োঅ্যাকটিভ যৌগ এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ক্যান্সার এর কোষ
বৃদ্ধি থেকে প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। এই মাশরুম বিশেষ করে প্রোস্টেট এবং স্তন
ক্যান্সার এর ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
৬. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে
মাশরুমে থাকা উপাদান গুলো ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এই মাশরুমে রয়েছে
বায়োঅ্যাকটিভ যৌগ এবং ফাইবার যা রক্তের শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ রাখতে সাহায্য
করে। এই মাশরুমে থাকা উপাদান বিশেষ করে টাইপ -২ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য
করে।
৭. ওজন কমাতে সাহায্য করে
এই মাশরুম কম ক্যালোরি এবং উচ্চ প্রোটিনযুক্ত খাবার হওয়ায় সহজেই ওজন কমাতে
সাহায্য করে। এটি কম ক্যালোরিযুক্ত খাবার হওয়ায় ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ থাকে, এতে
অতিরিক্ত খাবার খাওয়া কমানো যায় এতে ওজন নিয়ন্ত্রণ থাকে।
৮.স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করে
মাশরুমে থাকা পুষ্টি উপাদান গুলো আমাদের স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। এই
উপাদান গুলো আমাদের মস্তিষ্কের কোষগুলো উন্নত করে, এতে আমাদের স্মৃতিশক্তি ভালো
থাকে।
মাশরুমের পরিচিতি
মাশরুমের পরিচিতি সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানি না। মাশরুম হলো এক ধরনের ছত্রাক, যা
আমরা খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করি। এই মাশরুম বাংলাদেশের প্রায় সকল জায়গায় কম বেশি
পাওয়া যায়। এটি নরম মাটিতে জন্মাতে ভালো বাসে।বর্তমানে বাংলাদেশ সহ বিভিন্ন দেশে
বাণিজ্যিক ভাবে মাশরুম চাষ করা হচ্ছে।
এটি কিছুটা অ্যাসকোমাইসিটিস (Ascomycetes) এবং ব্যাসিডিওমাইসিটিস (
Basidiomycetes) শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত। এই মাশরুমে ভিটামিন, প্রোটিন, খনিজ সকল
পুষ্টি উপাদান গুলো রয়েছে যা মানব দেহের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
মাশরুমের বৈশিষ্ট্য
- মাশরুম ছত্রাকের ফরুটিং বডি ফলদায়ক অংশ হিসেবে থাকে যা সাধারণ দেখতে ছাতার মতো লাগে। কেউ কেউ মজা করে ব্যাঙের ছাতাও বলে থাকে।
- এই মাশরুমের সবুজ ক্লোরোফিল থাকে না তাই এরা নিজে খাদ্য উৎপাদন করতে পারে না। এর পচা গলা জৈব থেকে পুষ্টি সংগ্রহ করে তৈরি হয়।
- এই মাশরুম খুবই তাড়াতাড়ি বেড়ে ওঠে, এবং এরা যে কোনো আবহাওয় তে বেড়ে উঠতে পারে।
মাশরুমের প্রকারভেদ
মাশরুম সম্পর্কে জেনে থাকলেও আমরা অনেকেই মাশরুমের প্রকারভেদ সম্পর্কে জানি না।
মাশরুম খাওয়ার আছে মাশরুমের প্রকারভেদ গুলো জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মাশরুম
প্রধানত তিন প্রকার হয়ে থাকে।
১. উদ্ভিদযোগ্য ( Edible) মাশরুম
এই মাশরুম মানুষ খাওয়ার উপযোগী। এই মাশরুমে পুষ্টি গুনে ভরপুর। এই মাশরুম গুলো
বিভিন্ন ভাবে খাওয়া যায়। মানব দেহ সুস্থ রাখতে এই মাশরুম গুলো গুরুত্বপূর্ণ
ভূমিকা পালন করে। যেমন :
- বোতাম মাশরুম ( Button Mushroom)
- শিটাকে ( Shiitake)
- পোর্টোবেলো ( portobello)
- অয়েস্টার ( Oyster)
২. ঔষধি (Medicinal) মাশরুম
এই মাশরুম দিয়ে বিভিন্ন ধরনের ঔষধ তৈরি করা হয়। আমাদের সবারই কম বেশি রোগ হয়ে
থাকে। সেই রোগেরই মহা ঔষধ হিসেবে কাজ করে এই মাশরুম গুলো। তাহলে চলুন মাশরুম
গুলোর নাম জেনে নি।
- করডিসেপস ( Cordyceps)
- রেইশি (Reishi)
- মাইতাকে ( Maitake)
৩. বিষাক্ত ( Poisonous) মাশরুম
এই মাশরুম গুলে খুবই বিষাক্ত হয়ে থাকে। এই মাশরুম গুলো খাওয়ার উপযোগী নয়। এই
মাশরুম গুলো খেলে মানুষের মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। তাই মাশরুম খাওয়ার আগে ভালো
করে দেখে নিন।তাহলে চলুন বিষাক্ত মাশরুম গুলোর নাম জেনে নি।
- ডেসট্রয়ার অ্যাঞ্জেল ( Destroying Angel)
- ডেথ ক্যাপ ( Death Cap)
মাশরুমের পুষ্টি উপাদান
মাশরুমের পুষ্টি উপাদান গুলো আমাদের জানা খুবই জুরুরি। যারা নিয়মিত মাশরুম খেয়ে
থাকেন, তাদের মাশরুমের পুষ্টি উপাদান গুলো জানা থাকলে খেতে সুবিধা হবে। এই
মাশরুমে প্রোটিন,ভিটামিন, খনিজ প্রায় সকল উপাদানই রয়েছে। এই উপাদান গুলো আমাদের
শরীরের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাহলে চলুন মাশরুমের পুষ্টি
উপাদান গুলো জেনে নি।
প্রতি ১০০ গ্রাম মাশরুমের পুষ্টি উপাদান
উপাদান নাম | পরিমাণ |
---|---|
ক্যালরি | ২২ ক্যালরি |
ভিটামিন C | ০.৫ মিলিগ্রাম |
জিঙ্ক | ০.৪ মিলিগ্রাম |
আয়রন | ০.৫ মিলিগ্রাম |
ভিটামিন D | ০.২ মাইক্রোগ্রাম |
ফাইবার | ১ গ্রাম |
ফসফরাস | ৮৭ মিলিগ্রাম |
ফোলেট | ১৮ মাইক্রোগ্রাম |
পটাশিয়াম | ৩১৮ মিলিগ্রাম |
ভিটামিন B5 (প্যান্টোথেনিক অ্যাসিড) | ১.৫ মিলিগ্রাম |
চর্বি | ০.৩ গ্রাম |
শর্করা | ১.৭ গ্রাম |
কার্বোহাইড্রেট | ৩.২ গ্রাম |
ম্যাগনেসিয়াম | ৯ মিলিগ্রাম |
ক্যালসিয়াম | ৩ মিলিগ্রাম |
প্রোটিন | ৩ গ্রাম |
ভিটামিন B2 (রিবোফ্লাভিন) | ০.১ মিলিগ্রাম |
ভিটামিন B3 (নিয়াসিন) | ৩.৬ মিলিগ্রাম |
মাশরুম খাওয়ার নিয়ম
মাশরুম খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানি না। মাশরুম কম বেশি আমরা সকলেই
খায়। মাশরুম খাওয়ার আগে মাশরুম খাওয়ার সঠিক নিয়ম জানা খুবই জুরুরি। নিয়ম অনুসরণ
করে মাশরুম খেলে অনেক উপকার পাওয়া যায়। তাহলে চলুন মাশরুম খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে
বিস্তারিত জেনে নি।
আরো পড়ুন :
কিসমিস খাওয়ার ২৫ টি উপকারিতা
১. খাবার উপযোগী মাশরুম নির্বাচন করুন
বর্তমানে প্রায় সকল জায়গায় কম বেশি এই মাশরুম পাওয়া যায়। এই মাশরুম অনেক ধরনের
হয়ে থাকে। কিছু মাশরুম মানুষের জন্য ক্ষতিকর, যেগুলো বিষাক্ত মাশরুম। বাজারে
পাওয়া যায় চাষকৃত (cultivated) মাশরুম যে গুলো খাওয়া আমাদের শরীরের জন্য ভালো।
যেমন : শিটাকে মাশরুম, বাটন মাশরুম পোর্টোবেলো মাশরুম,ওয়েস্টার মাশরুম ইত্যাদি
আমাদের শরীরের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
২. ভালোভাবে ধুয়ে নিন
মাশরুম আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী। এই মাশরুম জমিতে চাষ করার সময় বিভিন্ন
মেডিসিন ব্যবহার করা হয়। এতে অনেক ধরনের ক্ষতিকর জীবানু লেগে থাকতে পারে। তাই
মাশরুম খাওয়ার আগে পরিষ্কার পানিতে ভালো করে ধুয়ে খেতে হবে।
৩. সঠিকভাবে রান্না করুন
মাশরুম আমাদের শরীরের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই মাশরুম কাঁচা না খাওয়ায় ভালো
কারণ এতে কিছু এনজাইম থাকে যা হজমে সমস্যা দেখা দিতে পারে। হালকা ভাজা বা তরকারি
করে রান্না করে খাওয়াই ভালো।
৪. নিদিষ্ট পরিমাণে খান
অতিরিক্ত মাশরুম খেলে আমাদের শরীরের ক্ষতি হতে পারে। অতিরিক্ত খেলে আমাদের হজমের
সমস্যা এবং গ্যাসের সমস্যা হতে পারে। তাই প্রতিদিন নিয়ম অনুসরণ করে ১০০-২০০ গ্রাম
খেলেই যথেষ্ট।
৫. সঠিকভাবে সংরক্ষণ করুন
মাশরুম সঠিক ভাবে সংরক্ষণ করতে হবে। মাশরুম ফ্রিজে রেখে খেলে ৩-৪ দিন খেতে
পারবেন। আর যদি অধিক সময় ধরে মাশরুম সংরক্ষণ করতে চান তাহলে শুকনো মাশরুম বা
ফ্রোজেন মাশরুম ব্যবহার করুন।
মাশরুম কত টাকা কেজি
মাশরুম কত টাকা কেজি তা অনেকেই সঠিক জানে না। মাশরুমের দাম বিভিন্ন বিষয়ের ওপর
নির্ভর করে কম বেশি হয়। স্থান, এলাকা, উৎপাদন এবং সরবরাহের ওপর নির্ভর করে। তবে
সব মাশরুমের দাম একরকম নয়। বিভিন্ন ধরনের মাশরুমের বিভিন্ন রকম দাম।শীতকালে
মাশরুমের চাহিদা একটু বেশি থাকে এজন্য শীতকালে মাশরুমের দাম একটু বেশি হতে পারে।
বাংলাদেশে পাওয়া যায় এরকম কিছু মাশরুমের দামের মূল্য তালিকা নিচে দেওয়া হলো :
মাশরুম নাম | প্রতি কেজি মূল্য |
---|---|
পোর্টোবেলো মাশরুম | ৩০০–৬০০ টাকা কেজি |
ফুঞ্জি মাশরুম | ৩৫০–৬০০ টাকা কেজি |
স্ট্রবেরি মাশরুম | ৮০০–১২০০ টাকা কেজি |
অস্ট্রেলিয়ান বাটন মাশরুম | ২৫০–৪০০ টাকা কেজি |
শিটাকি মাশরুম | ৫০০–৮০০ টাকা কেজি |
শিরাকি মাশরুম (শিরাতাকি) | ৫০০–৮০০ টাকা কেজি |
এনোকি মাশরুম | ৪০০–৭০০ টাকা কেজি |
ট্রাফেল মাশরুম | ১০,০০০–২০,০০০ টাকা |
মোরেল মাশরুম | ২০০০–২৫০০ টাকা কেজি |
মাশরুম দিয়ে জনপ্রিয় কিছু রেসিপি
মাশরুম দিয়ে জনপ্রিয় কিছু রেসিপি রয়েছে যা সম্পর্কে হয়তো অনেকেই জানে না। মাশরুম
আমাদের শরীরের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যদি এভাবে রান্না করে
খায়।তাহলে এর গুনাগুন আরো বৃদ্ধি পাবে। তাহলে চলুন মাশরুম দিয়ে জনপ্রিয় রেসিপি
গুলো জেনে নি
১. মাশরুম ভাজি
- প্রথমে কিছু মাশরুম পরিস্কার পানিতে ধুয়ে কেটে নিন।
- এর পর পাতিলে তেল গরম করে রসুন ও পেঁয়াজ কুচি দিয়ে দিন।
- এর পর মাশরুম দিয়ে ৫-৬ মিনিট ভাজুন।
- এর পর গোলমরিচ,পরিমান মতো লবন, সামান্য সস দিয়ে কিছু খন ভাজুন।
- এর পর গরম গরম পরিবেশন করুন।
২. মাশরুম সুপ
- প্রথমে পরিষ্কার পানিতে মাশরুম ধুয়ে কেটে নিন।
- এর পর মাখন দিয়ে রসুন ও পেঁয়াজ কুচি ভাজুন।
- এর পর মাশরুম ও কর্নফ্লাওয়ার দিয়ে টেক্সচার তৈরি করুন।
- পরিমাণ মতো মরিচ, লবণ দিন।
- এর পর ৫-৬ মিনিট ভেজে পরিবেশন করুন।
মাশরুম পাউডার খাওয়ার নিয়ম
মাশরুম পাউডার খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানি না। মাশরুম খাওয়া যা মাশরুম
পাউডার খাওয়াও একই বিষয়। কাঁচা মাশরুমকে শুকিয়ে সংরক্ষণ করে পাউডার করা হয়। কাঁচা
মাশরুমের থেকে মাশরুম পাউডার এর উপকারীতা বেশি। মাশরুম পাউডার আমাদের শরীরের রোগ
প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
এছাড়া ও আমাদের শরীরের রক্ত স্বল্পতা দূর করতে সাহায্য করে। এই মাশরুমে রয়েছে
ভিটামিন ও খনিজ উপাদান যা আমাদের শরীরের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
তাহলে চলুন মাশরুম পাউডার খাওয়ার নিয়ম গুলো জেনে নি।
১. পানি বা গরম পানির সাথে মিশিয়ে
প্রতিদিন চা বা হালকা গরম পানির সাথে ১/২ চামচ মাশরুম পাউডার মিশিয়ে সেবন করতে
পারেন।
২.খাবারের সাথে মিশিয়ে
গরম দুধ,সুপ,কফির সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন। স্যুপ, স্যালাড বা বিভিন্ন তরকারিতে
মশলার মতো ব্যবহার করতে পারেন।
আরো পড়ুন :
আলু খাওয়ার ১০ টি উপকারিতা
৩. ক্যাপসুল বা সাপ্লিমেন্ট হিসেবে
আপনি চাইলে এই মাশরুম ক্যাপসুল হিসেবেও খেতে পারেন। প্রতিদিন ১-২ টি করে ক্যাপসুল
খেতে পারবেন।
সতর্কতা:
- অতিরিক্ত গ্রহণ করা এড়িয়ে চলুন। প্রতিদিন ১-২ চামচ এর বেশি খাওয়া উচিত নয়।
- গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারী মায়েরা খাওয়ার আগে চিকিৎসক এর পরামর্শ গ্রহণ করুন।
- উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস রোগিরা চিকিৎসক এর পরামর্শ অনুযায়ী গ্রহণ করুন।
বিষাক্ত মাশরুম চেনার উপায়
বিষাক্ত মাশরুম চেনার উপায় আমরা অনেকেই জানি না। বিষাক্ত মাশরুম চেনার কিছু
সাধারণ উপায় রয়েছে। যদিও একটু ভুল হয় তাহলে অনেক বড়ো বিপদে পড়তে পারেন।
সাবধানে, নিশ্চিত না হয়ে কখনো বন্য মাশরুম খাবেন না।
তাহলে চলুন বিষাক্ত মাশরুম
চেনার কিছু উপায় সম্পর্কে আলোচনা করি।
১. রঙ ও আকৃতি পর্যবেক্ষণ করুন
- বিষাক্ত মাশরুমের উজ্জ্বল রঙের ( লাল,কমলা,হলুদ) রঙ হয়ে থাকে।
- মাশরুমের ওপরের অংশে টুপি বা ক্যাপের ওপরের অংশে সাদা দাগ থাকলে ( Amanita) প্রজাতির মাশরুম যা বিষাক্ত হয়ে থাকে।
- যদি মাশরুমের নিচের অংশে ( গিলস) সাদা বা গাড় রঙের হয় তাহলে এটি বিষাক্ত মাশরুম।
২. গন্ধ পরীক্ষা করুন
- বিষাক্ত মাশরুমের বেশিরভাগই দুর্গন্ধযুক্ত বা রাসায়নিকজাতীয় হয়ে থাকে।
- কিছু বিষাক্ত মাশরুমের ফেনলের গন্ধ, মাছের পচা গন্ধ ইত্যাদি হতে পারে।
৩. রঙ পরিবর্তন পরীক্ষা করুন
একটি সুন্দর মাশরুম কাটলে বা হাতে নিলে যদি কালার পরিবর্তন হয়ে লাল, নিল, কালো
আকার ধারণ করে তাহলে এটি বিষাক্ত হতে পারে।
৪. দুধ বা রস বের হয় কি না দেখুন
কিছু মাশরুম কাটলে কালার পরিবর্তন হয়ে সাদা,হলুদ,কালো আকার ধারণ করে যদি দুধ বা
রস বের হয় তাহলে বিষাক্ত হতে পারে।
৫. ডালার নিচের অংশ পরীক্ষা করুন
- বিষাক্ত মাশরুমের অনেকেই ডালার নিচে পাতার মতো গঠন থাকে এগুলো সহজেই ভেঙে যায়।
- যদি গিলস ( প্লেটের মতো অংশ) হলুদ / সবুজ রঙের হয় তাহলে বিষাক্ত হতে পারে।
মাশরুমের অপকারিতা
মাশরুম আমাদের শরীরের জন্য যেমন উপকারি তেমনি কিছু সময় এই মাশরুম ক্ষতিকর হতে
পারে। তাই মাশরুম খাওয়ার আগে মাশরুম খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিবেন।
তাহলে চলুন মাশরুম খাওয়ার অপকারিতা গুলো জেনে নি।
- বিষাক্ত মাশরুমের ঝুঁকি রয়েছে তাই মাশরুম খাওয়ার আগে পরীক্ষা করে নিবেন। বন্য মাশরুম খাবেন না এতে বমি, পেট ব্যাথা, ইত্যাদি হতে পারে।
- কিছু কিছু মানুষের এই মাশরুমে অ্যালার্জি, চুলকানি, ফুসফুসে সমস্যা দেখা দিতে পারে।
- মাশরুমে থাকা কিছু যৌগ উপাদান হজমে সমস্যা করতে পারে।
- যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে অতিরিক্ত মাশরুম খেলে ডায়াবেটিস সমস্যা দেখা দিতে পারে।
- কিছু ঔষধের সাথে এই মাশরুম খেলে খারাপ প্রভাব পড়তে পারে। বিশেষ করে রক্ত পাতলা হওয়ার ঔষধ।
শেষ কথা : মাশরুমের উপকারিতা - মাশরুম খাওয়ার নিয়ম
প্রিয় পাঠক আজকের এই আর্টিকেলে আমরা মাশরুমের উপকারিতা ও মাশরুম খাওয়ার সকল নিয়ম
সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি।মাশরুম একটি সুস্বাদু পুষ্টিকর খাদ্য। এই মাশরুম
খাওয়ার আগে খুবই সর্তকতা অবলম্বন করতে হবে। কারণ কিছু মাশরুম রয়েছে যেগুলো খেলে
মানুষের মৃত্যু হতে পারে। তাই অবশ্যই ভালো মাশরুম খাবেন।
এই মাশরুম আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে শরীরকে রোগ মুক্ত করে। প্রিয় পাঠক
আজকের এই আর্টিকেলটি যদি আপনার একটুও উপকারে এসে থাকে তাহলে একটি সুন্দর কমেন্ট
করে জানাতে ভুলবেন না। প্রিয় পাঠক আজকের মতো এই পর্যন্তই ভালো থাকবেন সুস্থ
থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।
দ্যা ফ্রিল্যান্স আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url