খালি পেটে ডালিম খাওয়ার উপকারিতা জানুন

আপনি কি খালি পেটে ডালিম খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন। তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য আজকের এই আর্টিকেলে আমরা খালি পেটে ও গর্ভাবস্থায় ডালিম খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো।
খালি-পেটে-ডালিম-খাওয়ার-উপকারিতা
ডালিম আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী একটি ফল। এই ডালিমের অনেক পুষ্টি গুন রয়েছে। এটি বিশেষ করে গর্ভবতী মা ও বাচ্চাদের জন্য খুবই উপকারী। আজকের এই আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়লে আপনি সকল বিষয় গুলো বিস্তারিত জানতে পারবেন।

পেজ সূচিপত্র : খালি পেটে ডালিম খাওয়ার উপকারিতা জানুন 

খালি পেটে ডালিম খাওয়ার উপকারিতা

খালি পেটে ডালিম খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানার জন্য অনেকেই বিভিন্ন জায়গায় সার্চ দিয়ে খোজাখুজি করেন। ডালিম একটি প্রাকৃতিক পুষ্টিকারি ফল যা আমাদের শরীরের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই ডালিম আমাদের শরীরের রোগ নিরাময় করে শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।এটি বিশেষ করে গর্ভবতী মা ও বাচ্চাদের প্রধান পুষ্টিকারী ফল।আপেল সিডার ভিনেগার খাওয়ার সময় সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন । নিচে খালি পেটে ডালিম খাওয়ার উপকারিতা গুলো দেওয়া হলো :
  • হজমশক্তি উন্নত করে : ডালিম আমাদের শরীরের হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। ডালিমে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ফাইবার । এই ফাইবার আমাদের শরীরের খাদ্যনালী গুলো উন্নত করে হজম শক্তি বৃদ্ধি করে।
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি : ডালিমে থাকা ফাইটোকেমিক্যালস এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। যা আমাদের শরীরের ঠান্ডা, কাশি, জ্বর এবং সাধারণ সংক্রমণ রোগ নিরাময় করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
  • রক্ত পরিশোধন করে : এই ডালিম খালি পেটে খেলে সবচেয়ে বেশি কাজ করে। খালি পেটে ডালিম খেলে ডালিমে থাকা উপাদান গুলো আমাদের রক্তের টক্সিন দূর করে রক্ত বিশুদ্ধ করতে সাহায্য করে।
  • হৃদরোগের ঝুঁকি কমায় : ডালিমে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আমাদের শরীরের রক্তনালী গুলোকে পরিস্কার রাখতে সাহায্য করে। এই ডালিমের রস আমাদের শরীরের খারাপ কোলেস্টেরল ( এলডিএল) কমিয়ে ভালো কোলেস্টেরল ( এইচডিএল) বাড়াতে সাহায্য করে। এতে আমাদের শরীরের উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ হয়ে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে।
  • ত্বক উজ্জ্বল করে : এই ডালিমে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা আমাদের ত্বকের ব্রণ দূর করে প্রাকৃতিক ভাবে ত্বক উজ্জ্বল করে।
  • রক্তস্বল্পতা দূর করে : ডালিম আমাদের শরীরের রক্তের একটি ভালো উৎস। ডালিম এ প্রচুরপরিমাণ আয়রন থাকে যা আমাদের শরীরে রক্তের হিমোগ্লোবিন বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। এতে আমাদের শরীরে নতুন রক্ত তৈরি হয়ে রক্ত স্বল্পতা দূর করতে সাহায্য করে।
  • ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে : ডালিম আমাদের শরীরের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। ডালিমে থাকা উপাদান গুলো আমাদের শরীরের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।
  • হাঁড় ভালো রাখে : আমাদের শরীরের প্রতিটি হাঁড়ের সংযোগ স্থলে কার্টিলেজ নামে তরুনাস্হি থাকে। যা আমাদের হাঁড় গুলোকে নড়াচড়া করতে সাহায্য করে। ডালিমের রসে থাকা উপাদান গুলো আমাদের শরীরের হাঁড়ের সংযোগস্থল গুলোকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
  • ক্যান্সার প্রতিরোধে : ডালিম আমাদের শরীরে ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে। ডালিমে থাকা ফাইটোকেমিক্যালস এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ক্যান্সার কোস গুলোকে ধ্বংস করতে সাহায্য করে। সাধারণত কোলন, প্রোস্টেট,স্তন এই ধরনের ক্যান্সার এর ক্ষেত্রে এটি বেশি কাজ করে।
  • স্মৃতিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে : ডালিমে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা আমাদের স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। ফ্রি র‍্যাডিকেল নামক প্রক্রিয়ায় স্নায়ু কোষের ক্ষতি প্রতিরোধ করে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
  • ডায়রিয়া প্রতিরোধে : ডায়রিয়া প্রতিরোধে ডালিম রস অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ডায়রিয়া হলে আমাদের শরীর থেকে অনেক পানি ও লবন বের হয়ে যায়।এই ডালিম ফলের রস খেলে আস্তে আস্তে আমাদের শরীর ঠিক হয়ে যাবে।
ওপরে খালি পেটে ডালিম খাওয়ার উপকারিতা গুলো উল্লেখ করা হলো। ইতিমধ্যে হয়তো জেনে গেছেন ডালিম আমাদের শরীরের জন্য কতটা উপকারী।এই আর্টিকেলটি সম্পুর্ন পড়লে আপনি আরো গর্ভাবস্থায় ডালিম খাওয়ার উপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন।

ডালিমের পুষ্টিগুন

ডালিমের পুষ্টিগুন সম্পর্কে অনেকেই জানতে চেয়েছেন। ইতি মধ্যে ডালিম খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনেছেন। কিন্তু এই ডালিমে থাকা পুষ্টি গুন গুলো জানলে আপনি অবাক হবেন। এই ডালিম আমাদের মানব দেহে ঔষধের মত কাজ করে। নিচে প্রতি ১০০ গ্রাম ডালিমের পুষ্টি গুন গুলো দেওয়া হলো :
ক্রমিক নাম্বার উপাদান নাম পরিমাণ
০১ শক্তি ৮৩ ক্যালোরি
০২ ফলেট (ভিটামিন বি৯) ৩৮ মাইক্রোগ্রাম
০৩ প্রোটিন ১.৭ গ্রাম
০৪ কার্বোহাইড্রেট ১৮.৭ গ্রাম
০৫ চিনি ১৩.৭ গ্রাম
০৬ পটাশিয়াম ২৩৬ মিলি গ্রাম
০৭ ফাইবার ৪.০ গ্রাম
০৮ ফ্যাট ১.২ গ্রাম
০৯ ভিটামিন সি ১০.২ মিলি গ্রাম
১০ ভিটামিন কে ১৬.৪ মিলি গ্রাম

ডালিমের পরিচিতি

ডালিমের পরিচিতি সম্পর্কে অনেকেই জানতে চেয়েছেন। ডালিম কি? এটা দেখতে কেমন হয় আমরা অনেকেই জানি না।এই ডালিমের ইংরেজি নাম Pomegranot। তবে এটি বাংলাদেশেই একেক জায়গায় একেক নামে পরিচিতি পেয়েছে। যেমন : ডালিম, আনার, বেদানা ইত্যাদি। এই ডালিমের বৈজ্ঞানিক নাম punica granatum। বিজ্ঞানিক ভাষাই ডালিমকে এই নামে ডাকা হয়। সর্বপ্রথম ইরানের একটি রাস্ট্রে উদ্ভাবিত হয়েছিলো এই ডালিম।
সেখান থেকেই আস্তে আস্তে চারিদিকে ছড়িয়ে পরে । বর্তমানে আমাদের দেশেও প্রায় সব জায়গায়ই এ ডালিম পাওয়া যায়। এই ডালিম গাছের উচ্চতা ৫ থেকে ১০ মিটার বা ১৬ থেকে ৩৩ ফুট উচ্চতা হয়ে থাকে। এই ডালিম গাছের একাধিক শাখা রয়েছে । এই শাখা গুলোতে প্রচুর কাটা রয়েছে। এই শাখা গুলোতেই সাধারণত ডালিম ধরে।

ডালিমের লাল রঙের সুন্দর ফুল হয়। এই ফুলে ৫-৭ টি পাপরি থাকে। এই ফুল থেকেই লাল বা বেগুনি রঙের ডালিম ফল হয়। এই ডালিমের বাহিরের অংশ চারিদিকে একই হয়। আর ভেতরের অংশে অনেক গুলো পাচির থাকে। এর মধ্যে সুন্দর করে সাজানো দানা থাকে এগুলোই খেতে হয়। একটি গবেষণার নমুনায় দেখা গেছে একটি ডালিম বা বেদানা গাছ ২০০ বছরেরও বেশি সময় বেঁচে থাকে।

রাতে ডালিম খেলে কি হয়

রাতে ডালিম খেলে কি হয় এটা অনেকেই প্রশ্ন করে থাকেন। ডালিম সাধারণত একটি পুষ্টিকারী ফল। এই ফল খাওয়ার সাধারণত কোনো নির্ধারিত সময় দেওয়া নেই। তবে আপনি চাইলে রাতেও ডালিম খেতে পারেন। রাতে ডালিম খেতে অপকারিতার থেকে উপকারিতাই বেশি পাওয়া যায়।নিচে রাতে ডালিম খেলে কি হয় তা দেওয়া হলো :
  • রাতে ডালিম খেলে এই ডালিমে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সারারাত শরীরকে ডিটক্সিফাই করতে সাহায্য করে।
  • বিশেষ করে যারা ব্লাড প্রেশারে ভুগতেছেন রাতে ডালিম খেলে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে।
  • রাতে ডালিম খেলে এই ডালিমের পুষ্টিগুন গুলো আমাদের ত্বকের কোষগুলোর গঠন সুন্দর করতে সাহায্য করে।
  • রাতে ডালিম খেলে এই ডালিমে থাকা পলিফেনল আমাদের শরীরের হৃদপিণ্ড সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
রাতে ডালিম খাওয়ার উপকারিতা গুলো ওপরে উল্লেখ করা হলো। এছাড়াও রাতে ডালিম খেলে কিছু অপকারিতাও হতে পারে। যাদের গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা রয়েছে তাদের পেট ফাঁপা ও গ্যাসের সমস্যা হতে পারে। এছাড়াও এই ডালিমে প্রাকৃতিক ডিউরেটিক উপাদান থাকায় রাতে বার বার প্রস্রানের চাপ সৃষ্টি করতে পারে। এছাড়াও কারো কারো ঠান্ডা বা সর্দি সমস্যা হতে পারে।

ডালিম খাওয়ার নিয়ম

ডালিম খাওয়ার সঠিক নিয়ম সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানি না। ডালিম খাওয়ার আগে ডালিম খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে আমাদের জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নিয়ম অনুসরণ করে ডালিম খেলে অনেক উপকার পাওয়া যায়। ডালিম খাওয়ার সেরা সময় সকালে ও দুপুরে খাবার খাওয়ার আগে।
ডালিম-খাওয়ার-সঠিক-নিয়ম
সকালে খালি পেটে ডালিম খেলে এর অনেক ভালো ফলাফল পাওয়া যায়।এছাড়াও আপনি চাইলে রাতেও ডালিম খেতে পারেন। তবে রাতে ডালিম না খাওয়াই ভালো। আপনি যদি ডালিম খাওয়ার নিয়ম বা কিভাবে ডালিম খেতে হয় না জেনে থাকেন তাহলে নিচের নিয়ম গুলো অনুসরণ করতে পারেন।
  • আপনি চাইলে ডালিমের রস করেও খেতে পারেন।
  • সালাদের সাথে মিশিয়ে আপনি ডালিম ফল খেতে পারেন।
  • আপনি চাইলে বিভিন্ন ধরনের খাবার এর সাথেও এই ডালিম ফল যোগ করে খেতে পারেন। যেমন : খির, পায়েস ইত্যাদি ।
  • আপনি চাইলে সরাসরি দানা চিবিয়েও খেতে পারেন। এজন্য একটি সুন্দর ডালিম ফল ভেঙে তার ভেতর থেকে ডালিমের কোয়া গুলো আলাদা করে চিবিয়ে খেলে পারেন।
  • আপনি চাইলে ডালিমের রস করেও খেতে পারেন। এজন্য আপনাকে একটা সুন্দর ডালিম ফল ভেঙে তার ভেতর থেকে ডালিমের কোয়া গুলো আলাদা করে এর থেকে রস বের করে খেতে পারেন।

ডালিম খেলে কি গ্যাস হয়

ডালিম খেলে কি গ্যাস হয় এটা অনেকেই জানতে চেয়ে থাকেন। আসলে ডালিম একটি পুষ্টিকারী ফল। আমাদের শরীরের বিভিন্ন ভিটামিনের ঘারতি পূরণ করতে এই ডালিম খেয়ে থাকি। তবে অনেকেই প্রশ্ন করে থাকেন ডালিম খেলে কি গ্যাস হয়? সাধারণত ডালিম খেলে গ্যাস হওয়ার সম্ভবনা খুবই কম তবে কিছু মানুষের ক্ষেত্রে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হতে পারে।
এছাড়াও খালি পেটে অতিরিক্ত ডালিম খেলে গ্যাসের সমস্যা হতে পারে। এছাড়াও ভারী প্রোটিন জাতীয় খাবারের সঙ্গে যেমন : দুধ,চিজ চিনি ইত্যাদির সাথে মিশিয়ে খেলে পেট ফাঁপা ও গ্যাসের সমস্যা হতে পারে।

ডালিম খেলে কি রক্ত বাড়ে

ডালিম খেলে কি রক্ত বাড়ে না কি হয় তা সম্পর্কে অনেকেই জানতে চাচ্ছেন। ইতি মধ্যে জেনেছেন ডালিম একটি পুষ্টিকারী ফল। এই ডালিম খেলে আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিনের অভাব পূরণ করতে সাহায্য করে। তাই অনেকেই জানতে চায় ডালিম খেলে কি রক্ত বাড়ে? হ্যা অবশ্যই ডালিম খেলে রক্ত বাড়ে। 
এই ডালিমে রয়েছে প্রাকৃতিক আয়রন যা আমাদের রক্তে হিমোগ্লোবিন বৃদ্ধি করে নতুন রক্ত তৈরি করতে সাহায্য করে। এছাড়াও এই ডালিমে থাকা ভিটামিন সি আয়রনের শোষণ কমিয়ে শরীরে রক্ত বাড়াতে সাহায্য করে। এছাড়াও এই ডালিমে রয়েছে ফোলেট ও অন্যন্য মিনারেল যা আমাদের শরীরে নতুন রক্ত কণিকা তৈরি করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।

গর্ভাবস্থায় ডালিম খাওয়ার উপকারিতা

গর্ভাবস্থায় ডালিম খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে অনেকেই জানার জন্য বিভিন্ন জায়গায় সার্চ করে থাকেন। কিন্তু কোথাও সঠিক তথ্য খুঁজে পাচ্ছেন না কোনো সমস্যা নেই আজকের আর্টিকেলের এই অংশে আমি আপনাকে জানাবো গর্ভাবস্থায় ডালিম খাওয়ার সকল বিষয় গুলো নিয়ে। ইতিমধ্যে জেনেছেন ডালিম খুবই পুষ্টিকারী একটি ফল। 
গর্ভাবস্থায়-ডালিম-খাওয়ার-উপকারিতা
যা গর্ভাবস্থায় মা ও শিশুর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই ডালিমে থাকা ফোলেট, আয়রন, ভিটামিন, পটাসিয়াম, অ্যান্টি অক্সিডেন্ট গর্ভাবস্থায় মা ও শিশুর সকল পুষ্টি উপাদান পূরণ করতে সাহায্য করে। গর্ভাবস্থায় ডালিম খাওয়ার কিছু বিশেষ উপকারিতা রয়েছে। নিচে গর্ভাবস্থায় ডালিম বা বেদানা খাওয়ার কিছু উপকারিতা দেওয়া হলো :
  • হজমে সাহায্য করে : গর্ভাবস্থায় প্রায় দেখা যায় মা কোষ্ঠকাঠিন্য রোগে ভোগেন। এছাড়াও এসব অনেক হজমে সমস্যা হয়। এই ডালিমে রয়েছে ফাইবার যা গর্ভবতী মায়ের হজম শক্তি বৃদ্ধি করে কোষ্ঠকাঠিন্য রোগ দূর করতে সাহায্য করে।
  • রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে : গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মায়ের প্রায় দেখা যায় রক্তচাপের সমস্যা হয়। এই ডালিমে রয়েছে পটাসিয়াম ও অ্যান্টি অক্সিডেন্ট যা গর্ভবতী মায়ের উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।
  • রক্তস্বল্পতা দূর করে : গর্ভাবস্থায় একজন গর্ভবতী মায়ের প্রচুর পরিমাণ আয়রনের চাহিদা বাড়ে।এই ডালিমে রয়েছে ভিটামিন সি ও আয়রন যা গর্ভবতী মায়ের শরীরে হিমোগ্লোবিন বৃদ্ধি করে ফলে রক্তস্বল্পতা দূর হয়।
  • শিশুর ওজন বৃদ্ধি করে : গর্ভাবস্থায় ডালিম খাওয়া খুবই উপকারী। গর্ভাবস্থায় এই ডালিম খেলে ডালিমে থাকা উপাদান গুলো শিশুর ওজন বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
  • শিশুর মস্তিষ্ক বিকাশ ঘটায় : গর্ভাবস্থায় ডালিম খেলে এই ডালিমে থাকা ফোলেট শিশুর নিউরাল টিউব বিকাশে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে : গর্ভাবস্থায় প্রায় দেখা যায় গর্ভবতী মা অসুস্থ হয়ে যায়। এই ডালিমে রয়েছে ভিটামিন সি ও অন্য অন্য পুষ্টি উপাদান যা গর্ভবতী মায়ের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
ওপরে গর্ভাবস্থায় একজন গর্ভবতী মায়ের ডালিম খাওয়ার উপকারিতা গুলো দেওয়া হলো। তবে গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত ডালিম খাওয়া উচিত নয়। দিনে মাঝারি আকারের ডালিম খাওয়াই যথেষ্ট। সকালে বা দুপুরে খাবার পর খেলে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়।

ডালিম খাওয়ার অপকারিতা

ডালিম খাওয়ার অপকারিতা সম্পর্কে অনেকেই জানতে চাচ্ছেন। ডালিম আমাদের শরীরের জন্য একটি উপকারী ফল হলেও কিছু সময় এই ডালিম আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। ডালিম খাওয়ার আগে অবশ্যই ডালিম খাওয়ার অপকারিতা গুলো জেনে নেওয়া উচিত। নিচে ডালিম খাওয়ার অপকারিতা গুলো দেওয়া হলো :
  • অতিরিক্ত পরিমাণ ডালিম খেলে কিছু কিছু মানুষের পেট ফাঁপা ও গ্যাসের সমস্যা হতে পারে।
  • ডালিম আমাদের শরীরের উচ্চ রক্ত নিয়ন্ত্রণ করে তাই বিশেষ করে যারা রক্তচাপ কমানোর ঔষধ খাচ্ছেন বা যাদের আগে থেকেই প্রেসার কম তাদের ডালিম খেলে সমস্যা হতে পারে।
  • একসাথে অতিরিক্ত পরিমাণ ডালিম বা ডালিমের রস খেলে কিছু কিছু মানুষের পাতলা পায়খানা এমনকি ডায়রিয়া হয়ে যেতে পারে।
  • বিশেষ করে যাদের আগে থেকেই অ্যালার্জি রয়েছে। খুব অল্পতেই যাদের অ্যালার্জি হয় যেমন : গলা, হাত পা, ফুসকিড়ি ইত্যাদি চুলকায় তাদের ডালিম খেলে সমস্যা হতে পারে।
  • যারা বিশেষ করে উচ্চ রক্তচাপ,ব্লাড থিনার, কোলেস্টেরল জাতীয় ঔষধ খাচ্ছেন তাদের ডালিম খাওয়ার কারণে ঔষধের প্রতিক্রয়া পরিবর্তন করতে পারে।
ওপরে ডালিম খাওয়ার অপকারিতা গুলো বিস্তারিত ভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। আপনার যদি এ ধরনের কোনো সমস্যা দেখা দেয় বা ডালিম খাওয়ার পর কোনো সমস্যা দেখা দেয় তাহলে চিকিৎসক এর পরামর্শ অনুযায়ী গ্রহণ করুন।

শেষ কথা : খালি পেটে ডালিম খাওয়ার উপকারিতা

প্রিয় পাঠক আজকের এই আর্টিকেলে ডালিম খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। এছাড়াও আজকের এই আর্টিকেলে ডালিম খাওয়ার নিয়ম, ডালিম খেলে কি গ্যাস হয় তা সম্পর্কে জানিয়েছি। এছাড়াও গর্ভবতী মায়ের ডালিম খাওয়ার উপকারিতা ও ডালিম খাওয়ার অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। 

আপনি যদি ডালিম খেতে পছন্দ করে থাকেন তাহলে ওপরের উল্লেখিত ভিটামিন গুলো পেতে প্রতিদিন মাঝারি আকারের একটি ডালিম খেতে পারেন। প্রিয় পাঠক আজকের এই আর্টিকেলটি এ পর্যন্তই আল্লাহ হাফেজ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

দ্যা ফ্রিল্যান্স আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url