গাজর খাওয়ার ২০টি উপকারিতা ও ১০টি অপকারিতা সম্পর্কে জানুন
যদি আপনি গাজর খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে না জানেন তাহলে গাজর খেয়ে
উপকারী পাবেন না। গাজরে রয়েছে ভিটামিন এ যা শরীরের শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে
। আপনি যদি গাজর খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা জানতে আগ্রহী হন। তাহলে আজকের
আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
পেজ সূচিপত্র :গাজর খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
গাজর খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
গাজর খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আমাদের বিস্তারিত জানা খুবই জুরুরি।গাজর হলো একটি
শীতকালীন সবজি। এই গাজর এ রয়েছে ভিটামিন এ যা আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ করে
শরীরের শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। গাজর খাওয়ার কিছু উপকারিতা নিচে উল্লেখ
করা হলো :
দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধিতে গাজর : গাজর হলো একটি শীতকালীন সবজি । যাতে অধিক
পরিমাণে ভিটামিন এ থাকে। যা আমাদের শরীরের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ । গাজরে রয়েছে
ভিটামিন এ যা আমাদের দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
আরো পড়ুন :
রাতে কলা খাওয়ার ১০টি উপকারীতা
ত্বক উজ্জ্বল ও সুস্থ রাখতে: কিভাবছেন দিন দিন আপনার ত্বক নষ্ট হয়ে যাচ্ছে
। ত্বক উজ্জ্বল করতে গাজর খেতে পারেন । গাজরে রয়েছে বিটা ক্যারোটিন যা খাওয়ার পর
ভিটামিন এ তে রুপ নেয় । এই ভিটামিন এ আপনার ত্বককে ভেতর থেকে উজ্জ্বল করতে
সাহায্য করে।
দাঁত ও মুখের যত্নে : দাঁত ও মুখের আমাদের যত্ন করা উচিত । কারণ এগুলোই
আমাদের শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। গাজর খেলে আমাদের মুখে লালার উৎপাদন বৃদ্ধি করে।
আমাদের মুখে বিভিন্ন কারণে অনেক দূর গন্ধ হয়। যা এই সমাজে বের হলে অনেক লজ্জায়
পড়তে হয়। এই গাজর খেলে মুখের দূরগন্ধ দূর হয় এবং শরীরকে সুস্থ রাখে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে :গাজর হলো একটি পুষ্টিকারী সবজি। গাজরে
রয়েছে ভিটামিন এ যা আমাদের শরীরের বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করে।
গাজরে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা আমাদের শরীরে জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়াই করে
শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
ওজন কমাতে সাহায্য করে : আমরা অনেকেই ওজন নিয়ে চিন্তিত । অধিক মোটা হয়ে
গেলে শরীর নিয়ে চলাচল করা অনেক কষ্টকর। ওজন কমাতে আপনি গাজর খেতে পারেন । কারণ
গাজর হলো কম ক্যালরি যুক্ত খাবার এর মধ্যে উন্নতম। এই গাজরে রয়েছে ফাইবার যা
অনেকখন পেটকে ভরিয়ে রাখতে সাহায্য করে । যার কারনে ক্ষুধা লাগে না এবং ওজন
নিয়ন্ত্রণে আসে।
চুলের যত্নে : আমাদের শরীরের সৌন্দর্যের অন্যতম হলো চুল। আমাদের চুলকে
সুস্থ সুন্দর রাখতে আমরা গাজর খেতে পারি। কারণ গাজরে রয়েছে ভিটামিন এ যা আমাদের
চুল এর গোড়া শক্ত করে চুল পড়া বন্ধ করে।চুলকে আগের থেকে আরো সুন্দর করে চকচকে করে
তুলতে সাহায্য করে।
হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে : গাজর হলো একটি পুষ্টিকারী সবজি। এই গাজর বিভিন্ন
রোগ নিরাময় করতে সাহায্য করে । গাজরে রয়েছে কেরাটিন ক্যারোটিনযেড যা হৃদপিণ্ডের
বিভিন্ন অসুখের বিরুদ্ধে ঔষধের মতো কাজ করে। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের
বিজ্ঞানীদের মতে একটি মানুষ যদি প্রতিদিন একটি করে গাজর খেতে পারে তাহলে তার
হার্ট অ্যাটাক এর ঝুঁকি ৬৮%কমে যায়।
হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে : গাজর হলো একটি পুষ্টি উৎপাদনকারী সবজি । এই
গাজরের পুষ্টি উপাদান আমাদের শরীরের হজমে সাহায্য করে । এছাড়াও শরীরের বিভিন্ন
রোগ নিরাময় করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এই গাজর।
ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে : গাজরে রয়েছে ভিটামিন এ যা আমাদের শরীরের
বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করে। গাজরে আরো রয়েছে Falcarinol
এবংFalcarindiol যা আমাদের শরীরে এন্ট্রি ক্যান্সার উৎপাদন গুলোকে relieve করতে
সাহায্য করে। আমরা যে খাবার খাই এই খাবার হজমের পর কিছু খাবার শরীরে থেকে যায়
যাকে ফ্রি র্যাডিকেলস বলে। এই ফ্রি র্যাডিকেলস আমাদের শরীরের কিছু কোষকে নষ্ট
করে। গাজর এই ফ্রি র্যাডিকেলস এর বিরুদ্ধে ভালো কাজ করে।
শক্তি বৃদ্ধিতে : গাজরে রয়েছে ভিটামিন এ যা আমাদের শরীরের বিভিন্ন রোগ
থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করে । আমরা অনেকেই অনেক রোগ এ আক্লান্ত হয় এই গাজর
আমাদের দেহকে রোগ থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। গাজর আমাদের অধিক শক্তি বৃদ্ধি
করতে সাহায্য করে।
গাজরের পুষ্টিগুন
গাজরের পুষ্টিগুন অনেক । গাজর একটি শীতকালীন পুষ্টিকারী সবজি। গাজর খাওয়া আমাদের
শরীরের জন্য খুবই জুরুরি । যদি নিয়মিত গাজর খেতে পারি তাহলে আমাদের শরীরে অনেক
ভালো থাকবে। এখন আমরা প্রতি ১০০গ্রাম গাজর এর পুষ্টিগুন সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো
।
- ভিটামিন এ ১৬৭০৬ ওট
- খাদ্য শক্তি ৪১কিলোক্যালরি
- বিটাক্যারোটিন ৮২৮৫ মাইক্রোগ্রাম
- খাদ্যআঁশ ২.৮ গ্রাম
- ভিটামিন বি-১,০.০৪মিলিগ্রাম
- ম্যাগনেসিয়াম ১২মিলিগ্রাম
- ফসফরাস ১২মিলিগ্রাম
- পটাশিয়াম ৩২০মিলিগ্রাম
- ভিটামিন কে ১৩.২ মাইক্রোগ্রাম
- ভিটামিন বি-২,০.০৫মিলিগ্রাম
- ক্যালসিয়াম ৩৩ মিলিগ্রাম
- ফলেট ১৯ মাইক্রোগ্রাম
- লৌহ ২.২ মিলিগ্রাম
- ভিটামিন সি ৫.৯মিলিগ্রাম
গাজর খাওয়ার নিয়ম
গাজর খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে আমাদের জানা খুবই জুরুরি । গাজরে রয়েছে অধিক পুষ্টিগুন
যা আমাদের শরীরের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। গাজর খাওয়ার কিছু নিয়ম আছে যা অনুসরণ
করলে অনেক উপকার পাওয়া যায় ।
এখন আমরা গাজর খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা নিয়ে আলোচনা করবো। নিচে গাজর খাওয়ার
নিয়ম কয়েকটি উল্লেখ করা হলো :
কাঁচা গাজর খাওয়া
গাজর একটি শীতকালীন সবজি । গাজরে রয়েছে অধিক পরিমাণে ভিটামিন এ ও পুষ্টি গুন যা
আমাদের শরীরের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ । কাঁচা গাজর মিষ্টি হওয়ায় অনেকেই কাচাঁ
গাজর খেতে পছন্দ করে। কাঁচা গাজরের অনেক উপকার রয়েছে । কাঁচা গাজর খেলে রক্ত ও
পেট পরিষ্কার হয়। কাঁচা গাজর আমরা অনেকেই সালাদ করে বিভিন্ন খাবারের সাথে খায়
।
আপনি যদি গাজর খেতে পছন্দ করেন তাহলে আপনার বিভিন্ন খাবারের অংশ হতে পারে এই গাজর
সালাদ হিসেবে । অনেকেই গাজর পিষে রস করে খায়। প্রতিদিন ১০০গ্রাম করে গাজরের রস
খেলে শরীরে অনেক উপকার পাওয়া যায়।
গাজর রান্না করে খাওয়া
গাজর একটি শীতকালীন সবজির মধ্যে অন্যতম। যেহেতু গাজর একটি সবজি তাই এটি বেশির ভাগ
মানুষ রান্না করেই বেশি খায়।কিন্তু রান্না করা গাজরের থেকে কাঁচা গাজরেই
পুষ্টিগুন বেশি থাকে । গাজর রান্না করলে আগুনের তাপে গাজরের পুষ্টিগুন কমে যায় ।
তাই গাজর রান্না করলে অল্প পরিমাণ তাপ দিয়ে রান্না করতে হবে তাহলে ভিটামিন কমে
যায় না ।
রান্না করা গাজর আমাদের শরীরের জন্য ভালো । রান্না করা গাজরের মধ্যে রয়েছে
ক্যারোটিনয়েড ও বিটা ক্যারোটিন যা আমাদের শরীরের রোগ নিরাময় করে শরীর সুস্থ রাখতে
সাহায্য করে ।
ক্যারোটিনয়েড ও বিটা ক্যারোটিন এই দুইটি উপাদান আমাদের চুল,ত্বক , ক্যান্সার ও
হৃদপিণ্ডের রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। গাজর আমরা বিভিন্ন ভাবে খেতে পারি যেমন
গাজরের হালুয়া , গাজরের ভর্তা, গাজরের বিভিন্ন সবজি ইত্যাদি । গাজর প্রায় সব
সবজির সাথেই যুক্ত করে খেতে পারবেন ।
গাজরের রসের উপকারীতা
গাজরের রসের উপকারীতা জানতে হবে । যারা নিয়মিত গাজর খেতে পছন্দ করেন তাদের গাজর
খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানা উচিত।গাজর হলে একটি শীতকালীন
সবজির মধ্যে অন্যতম।
কাঁচা গাজর খেতে অনেক সুস্বাদু লাগে তাই অনেকেই কাচাঁ গাজর খেতে পছন্দ করেন।
গাজরের রসের ও অনেক উপকার পাওয়া যায় । গাজরের রসের উপকারী অনেক নিচে কয়েকটি
গাজরের রসের উপকারীতা উল্লেখ করা হলো :
রোগ প্রতিরোধ করে :গাজরের রসে রয়েছে অধিক পরিমাণে ভিটামিন যা আমাদের
শরীরের রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে । গাজরের রস আমাদের শরীরের রোগ নিরাময় করে
শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
রক্তস্বল্পতা দূর : গাজর হলো একটি পুষ্টিকারী সবজি। এই গাজরে রয়েছে
ভিটামিন এ যা আমাদের শরীরের রোগ নিরাময় করে । গাজরে আরো রয়েছে অধিক পরিমাণে আয়রন।
যা আমাদের শরীরে রক্ত তৈরি করতে সাহায্য করে । এতে রক্তের স্বল্পতা দূর হয়। আপনি
যদি প্রতিদিন ২-৩ গ্লাস গাজরের রস কিছু দিন খেতে পারেন তাহলে আপনার রক্ত পরিষ্কার
হবে এবং শরীর সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
হাড় মজবুত : গাজর হলো একটি ভিটামিন যুক্ত খাবার । এই গাজরের রসে রয়েছে
অনেক রকম ভিটামিন। হাড় মজবুত করতে ভিটামিন -সি এবং ক্যালসিয়াম লাগে। যা এই গাজরের
রসে অধিক পরিমাণে রয়েছে ।
চোখের সমস্যায় : অনেকেরই চোখে সমস্যা হয়। চোখের সমস্যার প্রধান কারণ হলো
ভিটামিন এ এর অভাব। যা এই গাজরের রসের মধ্যে অধিক পরিমাণে রয়েছে ।
যৌন শক্তি বৃদ্ধিতে : গাজরের রসের অনেক উপকার রয়েছে । গাজরের রস পান করলে
আপনার যৌন শক্তি বৃদ্ধি পাবে। প্রতিদিন ২-৩গ্লাস গাজরের রস খেলে শুক্রানুর সংখ্যা
অধিক পরিমাণে বৃদ্ধি পায়।
প্রতিদিন কতটুকু গাজর খাওয়া উচিত
প্রতিদিন কতটুকু গাজর খাওয়া উচিত তা আমাদের জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ । আমরা জানি
এবং মানি যে কোনো কিছুই অতিরিক্ত ভালো না। যদিও গাজরে অধিক পরিমাণে ভিটামিন রয়েছে
কিন্তু অতিরিক্ত খেলে ক্ষতি হতে পারে । তাই প্রয়োজনের তুলনায় অধিক গাজর খেলে
আমাদের শরীরে বিভিন্ন রোগ হতে পারে ।
এই রোগ থেকে মুক্তি পেতে প্রতিদিন কতোটুকু গাজর খেতে হবে তা জেনে নিন।গাজর একটি
শীতকালীন সবজি । আপনি চাইলে কাঁচা গাজর খেতে পারেন আমার গাজর রান্না করেও খেতে
পারেন । তবে রান্না করলে ভিটামিন একটু কমে যায় । আপনি চাইলে গাজরের রস করেও খেতে
পারেন এতে সবচেয়ে উপকার বেশি পাওয়া যায় ।
প্রতিদিন ২-৩গ্লাস গাজরের রস খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ করে শরীরকে সুস্থ রাখতে
সাহায্য করে। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীর মতে একজন মানুষ যদি প্রতিদিন
একটি করে গাজর খায় তাহলে তার হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি ৬৮%কমে যায়। আমাদের শরীরকে
সুস্থ রেখে শরীরকে উন্নত করতে প্রতিদিন সর্বনিম্ন ১০০ গ্রাম গাজরের রস খাওয়া উচিত
।
গাজর দিয়ে রূপচর্চা
গাজর দিয়েও রূপচর্চা করা যায় । এতোখন আমরা জানলাম গাজর খাওয়ার উপকারিতা এখন আমরা
জানবো গাজর দিয়ে রূপচর্চা করা । আমরা অনেকেই ত্বক নিয়ে চিন্তিত । ত্বকে দাগ পড়ে
গেছে, রোদে ত্বক পুড়ে ত্বকে ব্রণ হয়েছে এসব দূর করতে গাজর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা
পালন করে ।
গাজর এ রয়েছে ভিটামিন এ যা আমাদের ত্বক কে উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে । আপনি চাইলে
বাড়িতেই গাজর দিয়ে ফেসপ্যাক বানাতে পারেন। প্রতি সপ্তাহে একবার ব্যবহার করলে অনেক
উপকার পাওয়া যায়। গাজর দিয়ে ফেসপ্যাক বানানোর কিছু টিপস নিচে দেওয়া হলো :
শসা ও গাজর : শসা ও গাজর দুটি উপাদান একসাথে মিশিয়ে অনেক ভালো ফেসপ্যাক
তৈরি করা যায় । প্রথমে প্রয়োজন অনুযায়ী শসা ও গাজর একসাথে মিশিয়ে নিন।তারপর
মিশ্রণটির সাথে এক চা চামচ মধু মিশিয়ে মুখে লাগিয়ে ৩০মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।
গাজর ও মধু : গাজর ও মধু একসাথে মিশিয়ে মুখে লাগালে অনেক উপকার পাওয়া যায়।
প্রথমে পরিমাণ কতো এককাপ পরিমাণ গাজর এর পেস্ট তৈরি করুন । তারপর তার সাথে দুই চা
চামচ মধু মিশিয়ে মুখে লাগিয়ে ১০মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।
কমলার খোসা ও গাজর : কমলার খোসা ও গাজর একসাথে মিশিয়ে অনেক ভালো ফেসপ্যাক
বানানো যায়।প্রথমে কমলার খোসা ছাড়িয়ে ভালো ভাবে রোদে শুকিয়ে গুড়ো করে তার সাথে
গাজরের পেস্ট মিশিয়ে মুখে লাগিয়ে ২০মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।
বেসন ও গাজর : বেসন ও গাজর একসাথে মিশিয়েও ভালো ফেসপ্যাক বানানো যায় ।
প্রথমে গাজরের পেস্ট এর সাথে দেড় চা চামচ বেসন ভালো ভাবে মিশিয়ে মুখে লাগিয়ে
১৫মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।
ওপরের উল্লেখিত বিষয় গুলো দিয়ে ত্বককে উজ্জ্বল করতে পারবেন। ত্বকের দাগ দূর ব্রণ
দূর আরো ত্বকের ময়লা দূর করা যায় । তবে মনে রাখবেন অতিরিক্ত কোনো কিছু ভালো না
এতে ক্ষতি হতে পারে ।
প্রতিদিন গাজর খাওয়ার উপকারিতা
প্রতিদিন গাজর খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ । গাজর একটি
শীতকালীন সবজি । এতে অনেক পুষ্টি উপাদান রয়েছে । তাই প্রতিদিন গাজর খাওয়া উচিত ।
যারা প্রতিদিন গাজর খায় তাদের প্রতিদিন গাজর খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত
জেনে নেওয়া উচিত । এখন আমরা প্রতিদিন গাজর খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত
আলোচনা করবো ।
- প্রতিদিন গাজর খেলে আমাদের শরীরের রক্ত পরিষ্কার হয়। এবং রক্ত চলাচল ভালো থাকে।
- প্রতিদিন গাজর খেলে কৃমিনাশক হিসেবে ভালো কাজ করে।
- প্রতিদিন গাজর খেলে আমাদের চুল ও ত্বক উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে।
- প্রতিদিন গাজর খেলে গাজরে থাকা বিটা ক্যারোটিন রক্তের গ্লুকোজ কমিয়ে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ রাখতে সাহায্য করে।
- প্রতিদিন গাজর খেলে আমাদের চোখ ভালো থাকে। আমাদের দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধিতে ভিটামিন এ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যা এই গাজরে অধিক পরিমাণে রয়েছে।
- প্রতিদিন গাজর খেলে গাজরে থাকা ফাইবার আমাদের পেট ভরে রাখে এতে খাবার নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং ওজন কমাতে সাহায্য করে।
- প্রতিদিন গাজর খেলে জন্ডিস এর মতো রোগ থেকেও মুক্তি পাওয়া যায়।
- প্রতিদিন গাজরের জুস খেলে শরীরের বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায় ।
গাজর খাওয়ার অপকারিতা
গাজর খাওয়ার অপকারিতা সম্পর্কে আমাদের জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। গাজর এ অনেক
পুষ্টি উপাদান রয়েছে কিন্তু আমরা জানি যে জিনিসে উপকার রয়েছে সেই জিনিসেই অপকারও
রয়েছে । অতিরিক্ত কোনো কিছুই ভালো না অতিরিক্ত গাজর খেলে ক্ষতি হতে পারে।
গাজর আমাদের অনেকেরই প্রিয় সবজি। তাই গাজর খাওয়ার আগে গাজর খাওয়ার অপকারীতা
সম্পর্কে বিস্তারিত জানা উচিত । নিচে গাজর খাওয়ার অপকারীতা নিয়ে আলোচনা করা হলো:
- আমরা আগে জেনেছি গাজরের অনেক পুষ্টি উপাদান রয়েছে। যাদের অ্যালার্জি জনিত সমস্যা রয়েছে তাদের গাজর খেলে অ্যালার্জি সমস্যা হতে পারে।
- যেসব মায়ের বাচ্চা হয়েছে তাদের বুকের দুধের স্বাদ পরিবর্তন হতে পারে।
- প্রতিদিন অতিরিক্ত গাজর খাওয়ার ফলে আমাদের ত্বকের রং চেঞ্জ হতে পারে । আমাদের ত্বক হলুদ রং ধারণ করতে পারে।
- আমরা আগে জেনেছি নিয়মিত গাজর খেলে আমাদের হজম শক্তি বৃদ্ধি করবে। তেমনি অতিরিক্ত গাজর খেলে আমাদের শরীরের ক্ষতি হতে পারে । কিছু সমস্যা দেখা দিতে পারে যেমন :ডায়রিয়া , গ্যাস পেট ফাঁপা ইত্যাদি ।
- আপনি যদি কাঁচা গাজর প্রতিদিন অধিক পরিমাণে খান তাহলে আপনার ডায়াবেটিস এর সমস্যা হতে পারে কারণ গাজরে থাকে অধিক পরিমাণে মিষ্টি যা ডায়াবেটিস এর সমস্যা হতে পারে।
- প্রতিদিন গাজর খেলে যেমন দাঁতের ক্ষয় রোধ হয় তেমনি প্রতিদিন অতিরিক্ত গাজর খেলে ক্ষতি হতে পারে ।
খালি পেটে গাজর খাওয়ার উপকারিতা
খালি পেটে গাজর খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আমাদের জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ । গাজর
হলো একটি পুষ্টি উপাদান । যা আমাদের শরীরের বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য
করে। গাজর আমরা বিভিন্ন সময় খায় কেউ ভরা পেটে খায় আবার কেউ খালি পেটে খায়। তবে
বিজ্ঞানিদের মতে গাজর খালি পেটে খাওয়া উচিত ।
এতে গাজরের রসে থাকা কার্ডিওভাসকুলার স্বাস্থ্য উন্নত করতে সাহায্য করে। খালি
পেটে গাজর খেলে গাজরে থাকা ভিটামিন এ আমাদের শরীরের রোগ নিরাময় করতে সাহায্য করে
।
খালি পেটে গাজরের রস খেলে শরীরের বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি দিয়ে শরীরের বিষাক্ত
পদার্থ বের করে শরীরকে সুস্থ রাখে। তাই প্রতিদিন গাজর খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
আপনি যদি প্রতিদিন গাজর খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারেন তাহলে আর কোনো রোগ হতে
পারবে না। কাঁচা গাজরের রস বেশি কার্যকারী।
গাজর চাষ পদ্ধতি
মাটি নির্বাচন করা
গাজর চাষ পদ্ধতি জানা খুবই জুরুরি । গাজর এমন স্থানে চাষ করতে হবে যেখানে
পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা আছে। গাজর চাষের জন্যে সবচেয়ে ভালো
মাটি বেলে দোআঁশ ও দোআঁশ মাটি সবচেয়ে ভালো ।
বীজ বপনের সময়
গাজর একটি শীতকালীন সবজি । এটি বছরের একবারই ভালো ফলন পাওয়া যায় । যদিও এখন সারাবছর সব সবজিই কম বেশি পাওয়া যায় । গাজর চাষের উপযুক্ত সময় হলো আশ্বিন থেকে কার্তিক মধ্য সেপ্টেম্বর মধ্য নভেম্বর মাসে বিজ বোনার উপযুক্ত সময় ।
বীজ এর পরিমাণ
গাজর চাষের জন্যে প্রতি হেক্টরে ৩-৪কেজি বীজ হলেই হয়।
বীজ বপনের দূরত্ব
গাজর চাষে অধিক ফলন পাওয়ার জন্য বীজ বপনের দূরত্ব ঠিক রাখতে হবে। গাজর গাছের সারি
থেকে সারির দূরত্ব হবে ২০-২৫সেমি। গাছ থেকে গাছের দূরত্ব হবে ১০সেমি।
জমি তৈরি
গাজর চাষের জন্যে বেলে দোআঁশ মাটি ও দোআঁশ মাটি ভালো ভাবে চাষ দিয়ে মাটি ঝুরঝুরে
করে মই দিয়ে জমি প্রস্তুত করতে হবে । গাজর সাধারণত পুরো জমিতে সিটিয়ে চাষ করা যায়
তবে সারিবদ্ধ ভাবে গাজর চাষ করলে ঠিক মতো পরিচর্যা করা যায় এতে গাজর ভালো
হয়।
এর পর গাজরের বিজ জমিতে বোপন করতে হবে। গাজরের বিজ অনেক ছোট হওয়ায় ভালো ভাবে বোনা
যায় না। তাই এর সাথে বালি বা ছায় মিশিয়েও বোপন করা যায় এতে সুবিধা হবে । তারপর
জমিতে সার প্রয়োগ করতে হবে।
সার পরিমান
ভালো ফলন পাওয়ার জন্য জমিতে পর্যাপ্ত পরিমাণে সার ব্যবহার করতে হবে । এখন আমরা
প্রতি এক হেক্টরের সারের পরিমান সম্পর্কে জানবো।
- টিএসপি ১২৫ কেজি
- ইউরিয়া ১৫০কেজি
- গোবর /জৈব সার ১০টন
- এসওপি /এম ও পি ২০০কেজি
সার প্রয়োগ পদ্ধতি
প্রথম ধাপ
প্রথমবার সম্পন্ন গোবর ও টিএসপি এবং অর্ধেক ইউরিয়া ও এমপি সার জমি তৈরির সময়
ভালো ভাবে দিতে হবে ।
দ্বিতীয় ধাপ
প্রথম বার দেওয়া ইউরিয়া সার এর যে অর্ধেক বাকি আছে দুইভাগ করে দুইবার দিতে হবে।
চারা গজানোর ১০-১২দিন একবার ইউরিয়া দিতে হবে। আবার ৩৫-৪০ দিন পর ইউরিয়া দিতে হবে।
শেষ ধাপ
প্রথম বার দেওয়া এমওপি সার এর যে অর্ধেক বাকি আছে ওইগুলো চারা গজানোর ৩৫-৪০দিন পর
দিয়ে দিতে হবে।
এর পর জমি নিয়মিত পরিচর্যা করতে হবে। জমিতে নিড়ানি দিতে হবে। জমির মাটি আলগা করে
দিতে হবে। জমিতে রস কম হলে জমিতে সেচ এর ব্যবস্থা করতে হবে । এই ভাবে পরিচর্যা
করলে ৭০-৮০ দিন পর গাজর খাওয়ার উপযুক্ত হয়। ভালো পরিচর্যা পেলে প্রতি হেক্টরে
২০-২৫ টন পর্যন্ত ফলন পাওয়া যায়।
শেষ কথা :গাজর খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
গাজর খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আমরা আজকে বিস্তারিত আলোচনা করলাম ।
আপনি যদি নিয়মিত গাজর খেতে পছন্দ করেন তাহলে আপনাকে অবশ্যই গাজর খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতাসম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হবে। আশা করি আজকের এই আর্টিকেল থেকে অনেক
কিছু জানতে পেরেছেন ।
এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনি কি এই ধরনের তথ্য
মূলক আর্টিকেল নিয়মিত পড়তে চান তাহলে আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করে রাখুন । আপনার
সুস্বাস্থ্য কামনা করি সুস্থ থাকুন ভালো থাকবেন আজকে এ পর্যন্তই আল্লাহ হাফেজ।
দ্যা ফ্রিল্যান্স আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url